রোজা অবস্থায় মেয়েদের 3টি আমলবেশি করে করা উচিত
রমজান শুরু হয়ে গিয়েছে, এই আনন্দের মাসটি এমনি এমনি কাটিয়ে দেওয়া খুব বড় বোকামি, তাই মেয়েদের এবং ছেলেদের ও উচিত এই মাসে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করা, মেয়েরা এই পবিত্র রমজান মাসে 3 টি কাজ বেশি বেশি করার চেষ্টা করুন।
১.বেশি সময় কুরআন তিলাওয়াত করুন,
প্রতিটি কাজে আল্লাহর বিধান খেয়াল রাখা মানেই আল্লাহ সচেতনতা। পবিত্র কোরআন চর্চা সচেতনতা বাড়ায়। ফজরের নামাজ পড়ে বা সারাদিন অন্তত ৩০ মিনিট কোরআন পড়ুন বা শুনুন।
কেননা রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। এ কারণে রমজানে কুরআন তিলাওয়াত অন্য সময়ের চেয়ে বেশি নেকি অর্জন হয় এবং উপকারে আসে। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রোজা ও কুরআন কিয়ামাতের দিন (আল্লাহর কাছে) মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে-
রোজা বলবে, হে প্রতিপালক! দিনের বেলায় আমি তাকে পানাহার ও যৌন আনন্দ উপভোগ থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করো।
কুরআন বলবে হে প্রতিপালক! (রাতে কুরআন পাঠের কারণে) রাতের নিদ্রা থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই (কুরআনের) এ পাঠকের ব্যাপারে আমার সুপারিশ মঞ্জুর করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এরপর উভয়েরই সুপারিশ কবুল করা হবে। (মুসনাদে আহমদ)
2.বেশি করে যিকির করুন
সারাদিন আল্লাহর মহিমা নিয়ে ভাবুন। মনে মনে যিকির করুন।
আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বাক্য চারটি। সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর নিকটে সর্বাধিক প্রিয় বাক্য চারটি। (১) سُبْحَانَ اللهِ ‘সুবহা-নাল্লাহ’ (২) الْحَمْدُ لِلَّهِ ‘আল-হামদুলিল্লা-হ’ (৩) لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু’ (৪) اللهُ أَكْبَرُ ‘আল্লাহু আকবার’। এই চারটি কালেমার যে কোন একটি (আগ-পিছ করে) প্রথমে বললে কেউ তোমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না’।[5] অপর এক বর্ণনায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, এই বাক্যগুলো এমনভাবে বান্দার পাপরাশি ঝরিয়ে ফেলে, যেমন গাছের পাতা ঝরে পড়ে
3.দোয়া করুন
ইফতারের আগে অযু করে আল কোরআনের দোয়ায় নিমগ্ন হোন। ইফতারের বরকতময় সময়ের আগে নিজের চাওয়াগুলো নিয়ে নিমগ্ন হোন। অন্যের রোগ ও সমস্যা মুক্তির জন্যও দোয়া করুন।
রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমত ও দয়া কামনা করে, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাত বা ক্ষমা চেয়ে এবং তৃতীয় দশ দিন নাজাত ও পরিত্রানের জন্য দোয়া করুন।
রোজাদার দিনে রোজা রেখে রাত জেগে জিকির-আজকার, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, তারাবি ও তাহাজ্জুদ নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার কারণে রোজাদারের দোয়া কবুল হয়। রোজার মাধ্যমে রোজাদার নিজেকে পুরস্কার, সম্মান, দয়া, অনুগ্রহসহ আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত করে তোলেন। একপর্যায়ে রোজাদার আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে গণ্য হন। তাই রোজাদার মাহে রমজানে দোয়া ও ইস্তেগফার করে আল্লাহর কাছে যা চান আল্লাহ তাঁর সে প্রার্থনা কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফেরত দেওয়া হয় না। ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া, জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের দোয়া, বাড়িতে ফিরে না আসা পর্যন্ত মুসাফিরের দোয়া।’ (তিরমিজি)
মাহে রমজান বিশেষভাবে দোয়া কবুলের মাস। মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত বিরাট কল্যাণ, রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের ধারক-বাহক। তাই মহান আল্লাহর দরবারে পাপমুক্তির জন্যদোয়ারমাধ্যমে নিজের দুই হাত অবশ্যই সম্প্রসারণ করা উচিত। ইফতারের আগে, সেহ্রির আগে ও পরে, তাহাজ্জুদ নামাজের সমাপনান্তে আল্লাহর কাছে দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তা কবুল করেন। সাধারণ সময় ছাড়াও এ সময়গুলোতে বেশি বেশি করে দোয়া, ক্ষমা প্রার্থনা, তওবা, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ, তাসবিহ, তাহলিল প্রভৃতি জিকিরের মাধ্যমে রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগি করা উচিত।
আল্লাহ আমাদের সকলকে বোঝার
তৌফিক দান করুন আমিন