আয়াতুল কুরসী শরীফের ফজিলত ও বরকত কোরআন হাদিসের আলোতে
আয়াতুল কুরসী নামে খ্যাত আয়াত কুরআন মজিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেষ্ঠ আয়াত, এটার ফজিলত বরকত ও মর্যাদা অপরিসীম। এ আয়াতে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন স্বীয় অস্তিত্ব, তাওহীদ ও অন্যান্য গুণাবলীর বর্ণনা বিশেষভাবে ব্যক্ত করেছেন। সকাল-বিকাল আয়াতুল কুরসির তেলাওয়াতে রয়েছে মুমিন বান্দার জন্য অনেক সুফল। ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলায়হি স্বীয় তারিখ গ্রন্থে আনস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন- নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন আরশ আযিমের নিম্নস্থান থেকে আয়াতুল কুরসী আমাকে দান করা হয়েছে। তফসীরে কবির ও তফসীরে নঈমীতে উল্লেখ আছে হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করবে তার এবং বেহেশতের মাঝখানে মৃত্যু ব্যতীত আর কোন বাঁধা থাকবে না। মৃত্যুর সাথে সাথে বেহেশতে প্রবেশের অধিকার উক্ত ব্যক্তি অর্জন করবে। আর সদা এ আয়াত তিলাওয়াতকারী সিদ্দিক ও আবিদ বান্দাগণের দলভুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে। তফসীরে দুররে মনসুর-এ উল্লেখ আছে আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াতকারীর উপর একজন ফেরেশতা নিযুক্ত হয়। সে ফেরেশতা দ্বিতীয় দিন তিলাওয়াতের সময় আসা পর্যন্ত তেলাওয়াতকারীর আমলনামায় নেকী লিপিবদ্ধ করেন এবং আমলনামা থেকে গুণাহ্ মোচন করতে থাকেন। তফসীরে কবির ও তফসীরে নঈমীতে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি ঘুমানোর আগে এ আয়াত তেলাওয়াত করবে তার ও তার প্রতিবেশীর ঘর বাড়ি চোর ডাকাত ও আগুণ থেকে সকাল পর্যন্ত নিরাপদে থাকবে। যে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করা হয় সে ঘর থেকে শয়তান একমাস পর্যন্ত এবং যাদুকর চল্লিশ দিন পর্যন্ত দূরে সরে পড়ে।
যে লোক সকাল সন্ধ্যায় নিজের ছেলে মেয়েদের উপর আয়াতুল কুরসী পড়ে ফুঁক দেবে এর বরকতে তারা শয়তান, যাদু ও বদ নযর থেকে নিরাপদে থাকবে। একজন সাহাবী নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করলেন এয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে কোন কিছুতে বরকত নেই, তদুত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামা এরশাদ করলেন আয়াতুল কুরসী পাঠ করতে থাক। এর দ্বারা বুঝা গেল আয়াতুল কুরসী পাঠে বরকত নাযিল হয়। যে ব্যক্তি সফরে রওয়ানা হওয়ার আগে ঘরে আয়াতুল কুরসী পাঠ করে ফুঁক দিয়ে বের হবে, সফর থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত তার সম্পদ ও পরিবার পরিজন নিরাপদে থাকবে।
[তাফসীরে দুররে মনসুর, তফসীরে কবির ও তফসীরে নঈমী ইত্যাদি]