ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাঈল কিভাবে ধ্বংস হবে? বিস্ময়কর সিন্ধুক তাবুতে সাকিনা, যা ইহুদীদের বিজয়ের অন্যতম নিদর্শন ছিল। তা এখন কোথায়? পর্ব-০১
ইমাম বাকের (রহঃ) থেকে জাবের জুফী বর্ননা করেন, “যখন রোমের বিদ্রোহীরা(রাশিয়ান অর্থডক্স খ্রিস্টানরা) রামাল্লায়(ঈসরাইলের দখলকৃত পশ্চিম তীর) অবতরণ করবে। হে জাবের ! ঐই বছর পাশ্চাত্যের পক্ষ থেকে সমগ্র বিশ্বে প্রচুর দ্বন্দ্ব-সংঘাত(যুদ্ধ বিগ্রহ) সংঘটিত হবে”। (বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা নং-১০২, আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা নং-৪৯)
ঈসরাইলের পতন সম্পর্কে বর্তমান যুগের স্কলার গন কি বলছেন?
“ইনশাল্লাহ, ঈসরাইল আগামী শতাব্দীতে ধ্বংস হয়ে যাবে, এমনকি আগামী শতাব্দীর এক চতুর্থাংশের মধ্যেই(অর্থাৎ প্রথম ২৫ বছর) এমনকি ২০২৭ সালেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কিভাবে আপনি এত নির্দিষ্ট করে বলছেন, তিনি উত্তর দিয়েছিলেনঃ আমি কোরআনকে বিশ্বাস করি। প্রতিটি জাতির জন্যই একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, প্রথম ৪০ বছর হল প্রতিষ্ঠার সময়, দ্বিতীয় ৪০ বছর হল নিরাপত্তা ও সুখ্যাতি অর্জনের সময়, শেষ ৪০ বছর হল বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের সময়”। (হামাসের প্রতিষ্ঠাতাঃ শাইখ আহমদ ইয়াসিন রহঃ)
- শাইখ বাসসাম জাররার (হাফিঃ) এর কুরআনের গাণিতিক সংখ্যার গবেষণা করে বলেছেন, ঈসরাইল ২০২২ সালে ধ্বংস হবে (ইনশাল্লাহ)।
- মসজিদুল আকসার ইমাম ড. খালেদ আল মাগরেবী (হাফিঃ) ২০১৭ সালে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ঈসরাইল ২০২২ সালে ধ্বংস হয়ে
- এমনকি ইহুদীদের বিখ্যাত পন্ডিত রাবাই ইউসুফ বারজার পর্যন্ত বলেছেন, ২০২২ সালে আকাশে একটি তারকা উদিত হবে হবে, যা নাকি মাসায়া (মাসীহ) এর আগমনের একটি লক্ষণ।
** যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরি কিসিন্জার একবার বলেছিলেন, No more Israel by 2022, প্রশ্ন হল সে কিভাবে বলেছ? উত্তর হলোঃ সেও কিন্তু খ্রিস্টান ধর্মের একজন অনুসারী, স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায়, তাদের ধর্ম গ্রন্থে ও End Time prophecy নিয়ে অনেক ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে। তাই সে তার ধর্মের ভবিষ্যৎবাণীর আলোকেই হয়তো বলেছে।
** সিরিয়ার সাংবাদিক আল বুজায়রামী ২০১২ সালে একবার ফিলিস্তিনের PA TV (Fatah) এর চ্যানেলকে বলেছিলেন, আমি এখন এমন একটি বিষয় বলতে যাচ্ছি, যা ইতিপূর্বে কেউ শুনে নাই। আমরিকার গোয়েন্দা সংস্থা CIA top secret নথি সাবেক আমরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে দিয়েছিল, যা এমন ছিল – “আমি মনে করি না, ঈসরাইল ২০২২ সালের পর অক্ষত থাকতে পারবে”।
ইমাম মাহদী জেরুজালেমকে খিলাফতের রাজধানী করবেন? এখান থেকেই পরিচালিত হবে আগামী দিনের মুসলিম বিশ্ব
- হযরত কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন তুমি বাইতুল মুকাদ্দাসে খলীফা (মাহদীকে) দেখবে। এবং উহা ব্যতীত আরেকজনকে দেখবে দামেস্কে। তখন উহা (মাহদী) ব্যতীত অনুসরণ করিও না। কেননা সে(সুফিয়ানী) হবে গাধার বংশধরের থেকেও নিচু জাতের।[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৫৮ ]
- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হাওয়ালাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ও হাওয়ালা! যদি তুমি তোমার জীবদ্দশায় দেখতে পাও, খিলাফত বায়তুল মোকাদ্দাসে (জেরুজালেমে) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? তখন ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস, বড় বড় দুর্যোগগুলো খুব নিকটবর্তী হবে। কিয়ামত খুব কাছে চলে আসবে। (মুস্তাদরাকে হাকেম)
- হযরত কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন তুমি বাইতুল মুকাদ্দাসের খলিফাকে (মাহদীকে) দেখবে। আর তাকে ব্যতীত আরেকজনকে (সুফিয়ানীকে) দেখবে তথা দামেস্কে। তখন তুমি তাকে (মাহদীকে) ব্যতীত অন্য কাউকে অনুসরণ করিও না। কেননা সে(সুফিয়ানী) হবে গাধার বংশধরের থেকেও নিকৃষ্ট। [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০১৭ ]
জেরুজালেম বিজয়ের পর ইমাম মাহদী ইহুদীদের সাথে কেমন ব্যবহার করবেন? ইহুদীদের বেশিরভাগই মুসলিম হয়ে যাবে?
- হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তাবূত আস সাকীনা (পবিত্র সিন্ধুকটি) আন্তাকিয়ার (তুরস্কের এন্টাকিয়া প্রদেশের) একটি গুহা থেকে এবং তাওরাতের অধ্যায় সমূহ শামের (সিরিয়ার) একটি পাহাড় থেকে বের করে আনা হবে। আর ঐ গ্রন্থের মাধ্যমে ইহুদীদের কাছে যুক্তি ও দলিল – প্রমাণ পেশ করা হবে। আর অবশেষে তাদের মধ্যে অনেকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে “। (মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা – ৩০৯, আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা – ৬৯)
- হযরত কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মহদী আলাইহিস সালামের নামকরণ মাহদী করে করার কারণ হচ্ছে যে, সে (ইহুদীদের আসল) তাওরাত কিতাবের পথ দেখাবে এবং ইহুদীদেরকে (আসল) তাওরাত কিতাবের দিকে ডাকবে। সে তাওরাত কিতাবকে সিরিয়ার (তুরস্কের এন্টাকিয়া প্রদেশ থেকে) এক পাহাড় থেকে খুজে বের করবে। অতপর উক্ত কিতাবের উপর(ইহুদীদের) অনেক দল আত্মসমর্পণ করবে। যা তিনি ত্রিশ হাজারের মত উল্লেখ করলেন। [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৩৫ ]
উল্লেখ আসল তাওরাত কিতাব ও কুরআনের মধ্যে কোন পরস্পর বিরোধী কিছু থাকবে না। কারন দুটি কিতাবই আল্লাহর কাছ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। যার কারণে ইহুদীরা আস্তে আস্তে হেদায়েতের দিকে আসবে এবং মুসলিম হয়ে যাবে।
- হযরত কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মাহদী রোমে যুদ্ধের জন্য সৈন্য পাঠাবেন। সেখানে দশজন বুদ্ধিমান জ্ঞানী দিবেন। যারা আন্তাকিয়ার(সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের এন্টাকিয়া প্রদেশের) এক গুহা থেকে তাবূত আস সাকীনা (Ark of the Covenant) খুজে বের করবে। যেটার ভিতর আল্লাহ তা’আলা মুসা (আঃ) উপর যে তাওরাত নাযিল করেছিলেন। এবং ঈসা (আঃ) উপর ইঞ্জিল নাযিল করেছিলেন তা থাকবে। তিনি তাওরাত ওয়ালাদেরকে (ইহুদীদেরকে) তাওরাত দ্বারা বিচার করবেন। এবং ইঞ্জিল ওয়ালাদের(খ্রিস্টানদেরকে) ইঞ্জিল দিয়ে বিচার করবেন। [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০২২ ]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তার (মাহদীর) মাধ্যমেই তাইবেরিয়ার হ্রদ (সিরিয়া ও ঈসরাইলের সীমান্তবর্তী টাইবেরিয়াস লেক) থেকেই এর উদ্ধার কাজ শুরু হবে। ঐ সিন্দুকটি (তাবূত আস সাকীনা) বাইতুল মোকাদ্দাসে আনা হবে এবং তার (মাহদীর) সামনে রাখা হবে। যখন ইহুদীরা তা দেখবে তখন তাদের মধ্যে কতিপয় ব্যাক্তি ব্যতীত সবাই ইমান আনবে “। (আল ফিতান ওয়াল মালাহিম, পৃষ্ঠা – ৫৭)
- হযরত সুলাইমান ইবনে ঈসা হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমার নিকট এই খবর পৌছেছে যে, মাহদীর হাতে বুহাইরাতুত তাবরিয়্যাহ (সিরিয়া ও ঈসরাইলের সীমান্তবর্তী টাইবেরিয়াস লেক) হতে তাবূত আস সাকীনা (Ark of the Covenant) প্রকাশ পাবে। এমনকি বহন করা হবে (বয়ে আনা হবে)। অতপর বাইতুল মুকাদ্দাসে (জেরুজালেমকে) তার (মাহদীর) সামনে রাখা হবে। যখন ইহুদিরা এটি দেখবে তখন তাদের অল্প সংখ্যাক ব্যতীত সবাই আত্মসমর্পণ করবে (ইসলাম গ্রহণ করবে)। অতপর মাহদী ইন্তেকাল করবেন। [ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৫০ ]