ছেলে বা মেয়ের কারো সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়া কি বৈধ?
উত্তর:- ইসলামের দৃষ্টিতে পিতা-মাতার জন্য তাদের ছেলে বা মেয়েকে এমন ব্যক্তির সাথে বিয়েতে বাধ্য করা জায়েজ নাই যাকে সে পছন্দ করে না বা যার সাথে তার বিয়েতে আগ্রহ নেই। রসূল ﷺ বিয়ের পূর্বে বর ও কনে একে অপরকে দেখে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,“তোমাদের কেউ যখন কোনো মেয়েকে বিয়ে করার ইচ্ছা করে তখন যতোদূর সম্ভব তাকে দেখে নিয়ে এ মর্মে নিশ্চিন্ত হওয়া উচিত যে, মেয়েটির মধ্যে এমন কিছু আছে যা তাকে বিয়ে করার প্রতি আকৃষ্ট করে।” (আহমদ ও আবু দাউদ)
অন্য হাদিসে নবী ﷺ বলছেন:”তাকে দেখে নাও, তোমাদের মধ্যে এটা ভালবাসার সৃষ্টি করবে।” [তিরমিযী)
বিয়ের পূর্বে দেখাদেখির বিষয়ে ইসলামে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এ কারণে যে, বর-কনে যেনো একে অপরকে দেখে তাদের নিজস্ব পছন্দ ও অপছন্দের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু যদি কাউকে তার অপছন্দের ব্যক্তির সাথে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেখানে তার ব্যক্তিগতো ইচ্ছা ও স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হলো যা তাদের দাম্পত্য জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে-এ সম্ভাবনাই বেশি।
এ ছাড়া হাদিসে বর্ণিতো হয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিতো। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ- ﷺ-বলেছেন,
“বিধবাকে তার মতামত ব্যতীতো বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং কুমারীকে তার অনুমতি ব্যতীতো বিয়ে দেওয়া যাবে না। তারা বললেন, তার অনুমতি কেমন হবে? তিনি বললেনঃ তার চুপচাপ থাকা।”
[সহিহ বুখারি হাদিস নম্বরঃ [৬৯৭০]
অর্থাৎ কুমারী মেয়ের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার পর সে যদি চুপ থাকে তাহলে তা তার সম্মতি হিসেবে গণ্য হবে। যেমন বাংলা প্রবাদে বলা হয়, নীরবতা সম্মতির লক্ষণ।
এ সব হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, বিয়ের ক্ষেত্রে বর ও কনের নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারো জন্য আল্লাহ প্রদত্ত তাদের এ স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার নাই। সুতরাং তাদের সম্মতি ছাড়া জোর পূর্বক বিয়েতে বাধ্য করা জায়েজ নেই।
সুতরাং ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক কাউকেই তার ইচ্ছার বাইরে কারো সাথে বিয়েতে বাধ্য করার সুযোগ নেই। কেউ যদি তার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে অথবা মেয়েকে এমন ব্যক্তির সাথে বিয়েতে বাধ্য করে তাহলে তাদের অধিকার রয়েছে বিয়ে রাখা অথবা ভঙ্গ করার।