তাসবীহে মাতেমী
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফাতিমা (রাঃ) যে তাসবীহ শিক্ষা দিয়েছিলেন , সকলের মাঝে তা “তাসবীহে ফাতেমী” নামে পরিচিত। সেই তাসবীহ আমাদের সকলের জানা দরকার । আজ আমরা সেই তাসবীহ সম্পর্কে জানব এবং নিয়মিত পাঠ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ।
হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন একবার গম পেষার যাঁতা ঘুরানোর কারণে হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে যায়। তখন হযরত ফাতিমা (রাঃ) একটি কাজের লোক চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে যান। কিন্তু তিনি তাঁকে পেলেন না। তখন তিনি আসার উদ্দেশ্যটি ‘আয়িশাহ (রাঃ) এর নিকট ব্যক্ত করেন। এরপর নবী (সাঃ) যখন গৃহে ফিরলেন তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) এ বিষয়টি নবী (সাঃ)কে জানালেন। হযরত আলী (রাঃ) বলেন অতপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এমন সময় আগমন করলেন যখন আমরা বিশ্রাম গ্রহণ করছিলাম। তখন আমি উঠতে চাইলে তিনি বললেনঃ নিজ স্থানেই অবস্থান কর। তারপর আমাদের মাঝখানেই তিনি এমনিভাবে বসে গেলেন যে, আমি তার দু’পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি বললেন,আমি কি তোমাদের এমন একটি ‘আমাল বলে দেব না, যা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক উত্তম। শোনো যখন তোমরা শয্যা গ্রহণ করতে যাবে, তখন তোমারা আল্লাহু আকবর ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আল্হামদু লিল্লাহ ৩৩ বার পড়বে। এটা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক কল্যাণকর।
(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩১৮)
অন্যান্য হাদীসের দিকে লক্ষ্য রেখে এভাবেও পড়তে পারেন ।
৩৩ সুবহানাল্লাহ
৩৩ আলহামদুলিল্লাহ
৩৩ আল্লাহু আকবার
মোট ৯৯ বার হবে এক্ষেত্রে শেষে আরেকবার বেশি আল্লাহু আকবার পাঠ করে ১০০ পূর্ণ করতে পারেন । (সহীহ ইবনে হিব্বান ২০১৮ হাদিসের মধ্যে এমনটা উল্লেখ আছে )
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এটা মুখের উচ্চারণ ১০০ বার হবে আর মিজানের দাড়িপাল্লায় যা ১০০০ এ রূপান্তরিত হবে । সুবহানাল্লাহ
(সহীহ ইবনে হিব্বান ২০১৮)
এছাড়া আরেকটা পদ্ধতি রয়েছে
(সহীহ ইবনে হিব্বান ২০১৩) হাদিসের মধ্যে রয়েছে শেষে একবার
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
উচ্চারণ- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির ।
অনুবাদ – আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই । তিনি এক, তিনার কোনো শরিক নাই । তিনি সমস্ত কিছুর মালিক এবং সমস্ত প্রশংসা তার জন্যই । তিনি সমস্ত বিষয়ে ক্ষমতাশীল ।
তাহলে দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো
৩৩ সুবহানাল্লাহ
৩৩ আলহামদুলিল্লাহ
৩৩ আল্লাহু আকবার
আর শেষে ১ বার পাঠ করে ১০০ পূর্ণ করতে হবে ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে এমন করবে তার সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশির সমান হয় ।
(সহীহ ইবনে হিব্বান ২০১৩)
সুবহানাল্লাহ । এই তাসবিহ পাঠের কিছু দুনিয়াবী লাভ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো কাজকর্মে মনোযোগী হওয়া যায় এবং অলসতা দূর হয় ।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমরা নিয়মিত এই তাসবিহ পাঠ করে দুনিয়া ও আখেরাতে লাভবান হতে চাই । আল্লাহ যেন কবুল করেন আমীন সুম্মা আমীন ।
প্রবন্ধটি লিখেছেন- আব্দুল আজিজ কাদেরী