ফজরের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠতে যা করবেন
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
মুমিনের জন্য ফজরের নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তার দিনের শুভক্ষণ শুরু হয় ফজরের নামাজের মাধ্যমে। যে ব্যক্তি যথা সময়ে ফজরের নামাজ আদায় করে দিনের কাজ আরম্ভ করে; ওই ব্যক্তির পরবর্তী ইবাদতগুলো যথাযথ আদায় করা সহজ হয়।
অনেকেই আছেন যারা ফজরের নামাজ আদায় করতে পারেন না। আজানের পরও অনেকে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। আবার অনেকে অলসতা বা অন্য কোনো কারণে ঘুম থেকে উঠতে চায় না। আবার কেউ কেউ নামাজের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর ঘুম থেকে ওঠেন।
ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে অনেকে আফসোস করে আর বলে হায়! ফজরের নামাজ আদায় করা হলো না।
যে বান্দা নামাজকে বেশি ভালোবাসেন অথচ ফজরের নামাজ যথা সময়ে আদায় করতে পারেন না; তারা বিষয়টি ব্যথাভরা মনে উপলব্ধি করেন। তাঁরা যেন ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে জেগে উঠতে পারেন। সে বিষয়ে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয়-
১- রাতে ঘুমানোর সময় বিসমিল্লাহর সঙ্গে অজু করে দুই বা ৪ রাকাআত নামাজ পড়ে ঘুমানো এবং ফজরের নামাজ পড়ার ব্যাপারে এভাবে দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করা যে, আমি অবশ্যই ফজরের নামাজ যথা সময়ে আদায় করব।
২- ফজরের নামাজ যথা সময়ে আদায় করতে মোবাইল বা ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে ঘুমাতে যাওয়া। যাতে মোবাইল বা ঘড়ির অ্যালার্মের শব্দে ফজরের সময় ঘুম ভেঙ্গে যায়।
৩- রাত গভীর না করে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া। বিনা কারণে দেরিতে ঘুমানোর ফলেই যথা সময়ে ফজর আদায় সম্ভব হয় না।
৪- রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম না আসলে হালকা দৈহিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা যেতে পারে। যাতে হালকা ব্যায়ম বা ক্লান্তির কারণে যথা সময়ে ঘুম চলে আসে।
৫- ঘুমের অলসতা ত্যাগ করা জরুরি। অনেকেই ঘড়ি বা মোবাইলের অ্যালার্ম শুনে অথবা আজানের আওয়াজ শুনে অলসতাবশত ঘুম থেকে উঠতে চায় না। আবার অনেকেই এ রকম করে যে, আরেকটু ঘুমিয়ে নিই; তারপর উঠব। এ মনসিকতা পরিহার করা।
৬- প্রতিবেশীর সহযোগিতা নেয়া। যিনি নিয়মিত ফজরের জামাআত বা নামাজে অংশ গ্রহণ করেন। সম্ভব হলে তাঁকে বলে রাখা যে, ফজরের নামাজের জন্য যেন তাকে ডাকা হয়। এটা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
৭- বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যারা ফজরের নামাজ যথা সময়ে আদায় করেন; তাদেরকে বলা যে, ফজরের সময় যেন, মোবাইল বা অন্য কোনোভাবে জাগিয়ে দেয়।
৮- নিজের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। অন্যান্য ওয়াক্তের মতো ফজরের নামাজও ফরজ। সুতরাং ফজর যেহেতু দিনের শুরুর নামাজ; তাই এ নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তা যথা সময়ে পড়ার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
৯- রাতে ঘুমানোর সময় মৃত্যুর কথা স্মরণ করা। এ চেতনা হৃদয়ে জাগ্রত করা যে, নামাজ না পড়া অবস্থায় যদি মৃত্যু হয় তবে পরিণতি কী হবে? এ অনুভূতি হৃদয়ে পোষণ করা।
১০- যে সব কাজের ফলে রাতে ঘুমাতে যেতে দেরি হয় তা বর্জন করা। সকালে ফজরের নামাজ যথা সময়ে আদায়ের পর সকালে শীতল বাতাসে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মাধ্যমে নিজের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করা।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে বোঝার এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন -আমিন-আমিন
পোষ্টটি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন ।