বাবরি মসজিদের সেই জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে খুব দ্রুত এটা আর কারো জানতে বাকি নেই তবে হয়তো অনেককেই এখনো পর্যন্ত জানে না যে বাবরি মসজিদ মুসলমানদের হাতছাড়া হলো কেন কিভাবে মুসলিমদের ঐতিহ্য পবিত্র বাবরি মসজিদ শহীদ করে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হলো?
প্রিয় পাঠক আমি গবেষণা করে যে সমস্ত কারণগুলি পেয়েছি নিশ্চিত ভাবে সেগুলি গ্রহণযোগ্য কারণ হিসাবে বিবেচিত হবে। আপনাদের কোনো কারণ জানা থাকলে জানাবেন ।
(১) কারণঃ– নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ত্রুটি । মুসলমান সমাজ যুগ যুগ ধরে এমন কিছু নেতার গোলামী করে আসছে যারা মুসলমানদেরকে শুধুমাত্র ব্যবহার করেছে । মুসলমানদের বিরুদ্ধে অন্যায় অবিচার হলে তারা কখনও প্রতিবাদ করেনি । মুসলমানগন শুধুমাত্র তাদের শিকারে পরিণত হয়েছে ।
(২) কারণঃ- সুপ্রিম কোর্টের ফাইসালা। আমরা সকলেই জানি কোন ফাইসালা করার পূর্বে বিচারপতিগণ উপযুক্ত প্রমাণ চেয়ে থাকেন । কখনোই ইতিপূর্বে কারো আস্থা ও বিশ্বাসের উপর কোন ফাইসালা হয়নি । কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণের ক্ষেত্রে দলিল এর চাইতে আস্থা বা বিশ্বাস কে প্রাধান্য দিয়ে ফায়সালা শুনিয়েছে । অনেক মুসলিম ও অমুসলিম গুণীজন এর অনেক সমালোচনা করেছেন । কিন্তু কোন লাভ হয়নি । অনেকেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে ছেন যে ভারতবর্ষের সংবিধানে এমন কোন ধারা নেই যার দ্বারা আস্থার উপরে ফায়সালা শোনানো যাবে । সুপ্রিম কোর্টের ফাইসালা বলে হাজার দুঃখ কষ্ট সহ্য করে সকলেই মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ।
(৩) কারণঃ- মুসলিমদের ঐক্যের অভাব । ভারতের মুসলিমরা একাধিক দলে বিভক্ত এবং বিভিন্ন পার্টির সমর্থক তাদের মধ্যে কোন একতা নেই । প্রভাবশালী কোন রাজনৈতিক দল নেই ছোটখাটো কিছু আছে তবুও তারা সমালোচনার শিকার, এছাড়া যথেষ্ট পরিমাণে মুসলিমদের সমর্থন পাচ্ছে না । যার কারণে মুসলিমদের আওয়াজ অতী দুর্বল হয়ে গেছে তাই কেউ মূল্য দিতে চাইনা । যার জন্য খুব সহজেই মুসলিম সমাজ পদদলিত হয়ে যাচ্ছে ।
তাদের বিরুদ্ধে যার যা ইচ্ছে তা সহজেই করতে সক্ষম হচ্ছে ।
কিন্তু ভাবুন তো যদি সমস্ত ভারতের মুসলিমদের একতা থাকত এবং নির্দিষ্ট কোনো শক্তিশালী রাজনৈতিক দল থাকতো তাহলে কি ইচ্ছামত অন্যায় অবিচার চাপিয়ে দিতে পারতো ।
মুসলিমদের দুর্বলতা ও বিচ্ছিন্নতার সুযোগ নিয়ে খুব সহজেই মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । যদি এই সময় রাম বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো কোনদিনই রাজনৈতিক ফায়দার জন্য সেই জায়গায় মন্দির বানাতে দিতেন না ।
মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণ এখনতো ক্ষমতার জোরে করে ফেলবে কিন্তু ইতিহাস ক্ষমা করবে না সকলে বলবে মসজিদের জায়গায় জোর করে মন্দির বানানো হয়েছে ।
যেকোনো দেশের সরকারের মূল দায়িত্ব হলো এমন কিছু করা যাতে করে সকলকে নিয়ে মিলেমিশে থাকা যায় । মন্দিরটা অন্য কোন জায়গায় করলে ভারত সরকার যথেষ্ট পরিমাণে উভয় সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ভালোবাসা পেতে । কিন্তু দেশ-বিদেশে অপকর্মের কারণে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে ।
শামশের আলম বড় কষ্টের সঙ্গে একটি কবিতা লিখেছেন,
হৃদয়ের দ্বারে আগুন লেগেছে
হৃদয়ের দ্বারে আগুন লেগেছে চোখের কোনে জল,
বুকের উপর উল্লাসে মেতেছে নরপিশাচের দল।
চোখ বুজে দেখে যাওয়া আর সয়ে যাওয়া শুধু,
প্রশান্তচিত্ত লাগে যেন আজ মরুভূমি ধূ ধূ।
গাযওয়ায়ে হিন্দের আহ্বান হে খালিদের সেনা,
সময় এসেছে চুকিয়ে দেওয়ার যতো পাওনা দেনা।
তুমি ভুলে গেছো বদর ওহদ ইয়ারমুক প্রান্তর,
কাফের বাহিনীর সমুখে তিনশো তেরোর হুঙ্কার।
সংখ্যায় আমরা পাইনি বিজয় আল্লাহ মোদের সব,
আর একবার আইয়ুবী বাহিনীর হোক কলরব।
আটশো বছরের বিনম্রতার আজ ফলাফল চোখে,
আর কতোকাল ঘুমাবি রে তোরা অন্যায় দেখে।
মৃত্যু ভয়ে ঘরের কোণে যতোই থাকিস বসে,
সময় এলে পাকাফল সম আত্মা যাবে খসে।
উঠে পড় আজ ফজরের ডাকে অস্ত্রে দে শান,
আল্লাহর নামে মুছে দে রে অন্যায়ের নাম ও নিশান।