পবিত্র কুরআনে অনন্ত মহান আল্লাহ্ বলেছেন:
وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلاَ تَفَرَّقُوا…
‘তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রশি (পবিত্র কুরআন ও রাসূলের আদর্শ)-কে দৃঢ়ভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না…।’-সূরা আ~লি ইমরান : আয়াত ১০৩
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেছেন,তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর এবং তাঁর রাসূলের; আর তোমরা পরস্পর দ্বন্দ্ব করো না, তাহলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের হাওয়া বেরিয়ে যাবে (মানে, শক্তিও বিলুপ্ত হবে), সুতরাং তোমরা (মতপার্থক্য হলে) ধৈর্য ধারণ করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন (মানে, সাহায্য করেন)।-সূরা আল্-আনফাল : আয়াত ৪৬
ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই জানি। তাই বাড়ির ছোট্ট বাচ্চাদেরও আমরা মিলেমিশে থাকার সবক দিয়ে থাকি। কিন্তু আমরা, বড়োরা, নানান দলমত, মতবাদ আর মযহাব-মসলক নিয়ে কোন্দল করে বেড়াই। পরস্পর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করি। একটুও ধৈর্য ধরতে পারি না।
এমনটা কখনই কাম্য হতে পারে না।
মুসলিম সমাজে মতভেদ কোনও নতুন কিছু নয়। এটা ছিল, আছে, থাকবেও। কিন্তু দ্বন্দ্ব-কলহ থাকবে কেন! আমার কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন তো বাতিল রাজনীতি করে, তবুও আমি তাদের ভালোবাসি, তাদের সঙ্গে মিল-মহব্বত বজায় রেখে চলি। যদিও তাদের রাজনীতি আমি আমি সমর্থন করি না। তাহলে? অন্য মতভেদের ক্ষেত্রেও সংযমী হতে পারব না কেন?
হ্যাঁ, মুসলিমদের প্রত্যেকে যদি নিজেদের পছন্দের মত ও পথ যথাযথ অনুসরণ করার সাথে সাথে অন্যান্য মত ও পথের মুসলিম অনুসারীদের প্রতি সহমর্মিতা রাখেন এবং অন্তত প্রকাশ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কিছু না বলেন, তাহলে শত মতানৈক্য থাকলেও মুসলিম সমাজে ঐক্য আসতে পারে।
মূলকথা: মুসলিমরা সবাই সব বিষয়ে একমত হতে না-ও পারেন, চেষ্টা করলে একমন তো হতেই পারেন। তাই না?
কিন্তু ধর্ম ও চলমান রাজনীতি যাঁদের জীবিকা-পর্বত নির্মাণের মূল মাধ্যম, তাঁদের মূলধন তো অজ্ঞ জনগণ। তাই তাঁদের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া কঠিনতর ব্যাপারই বটে।
অবশ্য, আশার কথা, শিক্ষিত যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে শুভচেতনার উন্মেষ বাড়ছে। তাঁরা যদি প্রকাশ্যে বিষোদ্গার-করা নেতাদের বয়কট করার সাথে সাথে মানুষকে ঐক্যের গুরুত্ব বোঝানোর দায়িত্বও পালন করে যান, তাহলে সমাজ থেকে ক্রমশ অবাঞ্ছিত বিভেদের অন্ধকার বিদূরিত হবে, আর প্রজ্বলিত হবে কাঙ্ক্ষিত ঐক্যের আলো। ই ন শা আ ল্লা হ্…