যেসব নারীকে বিবাহ করলে জান্নাতী সুখ পাওয়া যায়

যেসব নারীকে বিবাহ করলে জান্নাতী সুখ পাওয়া যায়

বিয়ের পর অনেকের অভিযোগ, বিবাহিত জীবনে সে সুখী না । এ ক্ষেত্রে স্বামী, স্ত্রীর দোষ দেয় আর স্ত্রী স্বামীর দোষ দেয় ।
বিবাহের পূর্বে মেয়ের পক্ষ থেকে ছেলে সম্পর্কে ও তার পরিবার সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করা অত্যন্ত জরুরি । এমনিভাবে ছেলের পক্ষ থেকে মেয়ে ও তার পরিবার সম্পর্কে যাচাই বাছাই করে নেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি। তাহলে সংসার জীবন সুখ শান্তিতে ভরে যাবে ।

আজ শুধুমাত্র আলোচনা করব, একজন ছেলে কেমন মেয়ে বিয়ে করলে সুখী হবে ।

হাদিস শরীফের মধ্যে এ বিষয়ে রাসুল (ﷺ) সুন্দর ভাবে উপদেশ দিয়েছেন ।

যাদের মধ্যে মোটামুটি ইসলামী জ্ঞান আছে তারা অবশ্যই বিয়ের পূর্বে রাসুল (ﷺ) দেওয়া উপদেশ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে ।
বিয়ের পূর্বে উপদেশ গুলি পালন করে, বিয়ে করলে ইনশাল্লাহ সংসার সুখের হবে ।

আর কেউ যদি রাসুল (ﷺ) এর দেওয়া উপদেশগুলোর প্রতি বিয়ের পূর্বে গুরুত্ব না দেয় তাহলে সে সংসার জীবনে হয়তো সমস্যায় পড়তে পারে ।

তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কেমন মেয়েকে বিয়ে করলে একজন পুরুষ সুখী হবে এবং সংসার জীবন সুখ ও শান্তিতে ভরে যাবে ।

এ মর্মে ইমাম বোখারী (রহঃ) হযরত আবু হুরায়রা রাযি. সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন-

تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ 
চারটি বিষয় দেখে মেয়েকে বিয়ে করা হয়।

১. لِمَالِهَا (তার সম্পদ দেখে)
সাধারণত সম্পদশালী পরিবারের মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। মনে করা হয়, এই ফ্যামিলিতে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়তে পারলে উপহার উপঢৌকন ভালো পাওয়া যাবে। সমাদর ও কদর পাওয়া যাবে।
তাই প্রথমত সম্পদ দেখা হয় । তবে মনে রাখতে হবে সম্পদের বিষয়ে ছেলে ও মেয়ে উভয় যেন কাছাকাছি সমান হয় । না হলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে । এবং কোনভাবেই যেন মেয়ে পক্ষের কাছে কিছু দাবি না করা হয়, মেয়ের বাবার কাছে যৌতুক দাবি করা সম্পূর্ণরূপে হারাম । তবে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু দিয়ে থাকে তাহলে সেটা জায়েজ হবে ।

২. وَلِحَسَبِهَا (এবং তার বংশ দেখে)
বংশ দেখে বিয়ে করা হয়। জাত-বংশ ভালো, সম্মানিত পরিবার,সাধারণত ওই পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়।

৩. وَلِجَمَالِهَا(এবং তার রূপ-লাবন্য দেখে)
রূপ-লাবন্যের কারণে বিয়ে করা হয়।
বর্তমান যুগে এটা কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় । মানুষ রূপ দেখে পাগল হয়ে অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য করে না । এজন্য বেশি সমস্যার মুখে পড়ে । মনে রাখতে হবে সংসার জীবনে সুখি না হতে পারলে সেই রূপ কোন কাজে আসবে না ।

৪.وَلِدِينِهَا (এবং তার দীনদারি দেখে)
দীনদারি দেখে বিয়ে করা হয়।
অর্থাৎ – ইসলাম ধর্মের প্রতি সেই মেয়েটি কতটা আগ্রহী, ইসলামকে তার জীবনে কতটা বাস্তবায়ন করেছে । এবং কুরআন ও নামাজ পড়তে জানে কিনা সেটাও দেখা হাই বা দেখা উচিত । এগুলো ঠিক থাকলে সেই মেয়েটিকে ধার্মিক মেয়ে বলে বিবেচনা করা হবে ।
তবে সমাজে কিছু মেয়ে আছে যারা কোরআন পড়তে জানে নামাজ পড়তে জানে কিন্তু খুব মনোযোগ দিয়ে নিয়মিত ধর্মীয় কাজ করে না । যদি বংশ ভালো হয় তাহলে এই মেয়েগুলি বিয়ের পর ঠিক হয়ে যায় । তাই মোটামুটি ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞান থাকলেও সে মেয়েকে বিয়ে করতে কোন সমস্যা নেই ।

বিয়ের পূর্বে অবশ্যই এই চারটি দিক লক্ষ্য রাখতে হবে ।
তবে অন্যান্য দিক গুলো যদি তুলনামূলক একটু খারাপও হয় আর মেয়েটি ধার্মিক হয় । তাহলে নিঃসন্দেহে সেই মেয়েটিকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করা যাবে ।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ
সুতরাং তুমি দ্বীনদারী কেই প্রাধান্য দিবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।
বোখারী (৫০৯০)
এই চারটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দ্বীনদারী কেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে তারপর বাকিগুলো দেখতে হবে ।
কোথায় আছে,
ধার্মিক আত্মীয় খুঁজে নাও। রূপ-লাবন্য কয়দিনের!
যৌবন সারা জীবন ধরে রাখ যায় না। তাই এসবের ওপর আত্মীয়তার ভিত গড়ে তোলা যায় না।

এজন্য নেককার ও দীনদার স্ত্রী মৃত্যুর আগে পর্যন্ত স্বামীকে সুখে রাখে। রূপবতী স্ত্রীকে দেখলে স্বামীর চোখ খুশিতে হয়ত নেচে ওঠে। পক্ষান্তরে গুনবতী স্ত্রীকে দেখলে স্বামীর অন্তর প্রশান্তিতে ভরে ওঠে। চোখের আনন্দ আর অন্তরের প্রশান্তি এক নয়। সুতরাং চোখ নয়, বরং অন্তর খুশি করুন। আর যদি রুপা ও গুণ দুটো একসঙ্গে পাওয়া যায় তাহলে তো আরও বেশি ভালো ।

Spread the love

Leave a Comment