রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সকল মুসলমানের মুখস্ত আছে তবু একবার রিভাইস করে নেওয়া উত্তম । তাছাড়া বর্তমান ফিতনার যুগে অনেকেই বলছেন রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া বানানো এর কোন অস্তিত্ব নেই এবং এসব করা চলবে না । এর দ্বারা সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন ।
আজ রোজা রাখার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া আপনাদের সামনে তুলে ধরব এবং এর দলিল তুলে ধরবো । যাতে আপনার এবাদত ও বিশ্বাসের মধ্যে কেউ সমস্যা সৃষ্টি না করতে পারে ।
প্রথমে জানবো ইফতারের দোয়া ।
মুয়ায ইবনে যুহরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত
তাঁর নিকট হাদীস পৌঁছেছে যে, নবী (সাঃ) ইফতারের সময় বলতেনঃ
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
“আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া ‘আলা রিযক্বিক্বা আফতারতু”। অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার উদ্দেশ্যেই রোজা পালন করেছি এবং আপনার দেয়া রিযিক দ্বারাই ইফতার করেছি।
আবু দাউদ শরীফের এই হাদীস দ্বারা স্পষ্ট যে রোজা ইফতার করার সময় আমরা যে দোয়াটি পাঠ করি সেটা সম্পূর্ণ সুন্নতি দোয়া । তাই পরবর্তীতে কেউ যদি বলে এসমস্ত বানানো মিথ্যা তাহলে তার কথায় কর্ণপাত করবেন না ।
এবার জানবো রোজা রাখার নিয়ত
নিয়ত নিয়ে অনেক মানুষের সমস্যা অনেকে বলে থাকেন নিয়ত বলে কিছু নেই, নিয়ত করা বেদাত ।
প্রিয় দর্শক নিয়ত করা,চলবে নাকি চলবে না আসুন এটাও হাদিস দ্বারা জেনে নেয় ।
বুখারী শরীফের প্রথম হাদিসে উল্লেখ আছে হযরত ওমর ফারুক (রা) বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি
“ إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ،
all act depends upon intention
প্রত্যেকটি কাজ নিয়তের উপর নির্ভর করে ।
(বুখারী ০১)
নামাজ পড়লে আপনি কোন ওয়াক্তের কি নামাজ পড়ছেন ফরজ নাকি ওয়াজিব নাকি নফল এ নিয়ত আপনার থাকতে হবে ।
তেমনি রোজা রাখার ক্ষেত্রেও আপনি কোন রোজা রাখছেন ফরজ রোজা, নাকি নফল রোজা, নাকি মানতের রোজা তারও নিয়ত থাকতে হবে ।
আপনি বাড়ি থেকে বেরোনোর পূর্বে কোথায় যাবেন তারাও নিয়ত ঠিক করতে হয় । নিয়ত ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হয়না ।
আসুন এবার মূল বিষয়ে আসি ।
নিয়তের কথা হাদিস দ্বারা আমরা পেলাম কিন্তু কিভাবে নিয়ত করতে হবে সেটা পেলাম না ।
কেউ যদি মনে মনে নিয়ত করে আমি কালকে রোজা রাখব তাহলেই হয়ে যাবে ।
মনে মনে নিয়ত করলে যথেষ্ট মৌখিক নিয়ত জরুরী নয় ।
মুখে নিয়ত করা মুস্তাহাব বা ভালো
এবার আপনাদের সামনে ২টি আরবি নিয়ত বাংলায় উচ্চারণ ও অর্থসহ পেশ করা হল ।
نويت اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم.
উচ্চারণ:- নাওয়াইতু আন আসুমা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ – হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমাকে কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
نويت اَنْ اُصُوْمَ غَدًا لله تعالى مّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ هذا
উচ্চারণ :- নাওয়াইতুয়ান আসুমা গাদান লিল্লাহি তা’আলা মিন শাহরি রামাদানা হাযা ।
অর্থ :- আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আগামীকাল রমজানের রোজার নিয়ত করছি ।
২টো আরবি নিয়ত তার উচ্চারণ ও অর্থ আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো । যদি কেউ আরবি মুখস্ত করতে চান তাহলে করবেন আর নইলে তার অর্থকে বাংলা নিয়ত হিসাবে করতে পারবেন ।