সোলাইমান (আঃ) এর হুদ হুদ পাখি রানী বিলকিসের দরবারে
সুলাইমান (আ.) ছিলেন একটি দেশের বাদশাহ। আবার নবীও। তাই তার দায়িত্বও ছিল অনেক।
তিনি পশুপাখিদের ভাষা বুঝতেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে এই অলৌকিক ক্ষমতা দান করেছিলেন। রাষ্ট্রের গোয়েন্দাগিরি,সংবাদ আদান-প্রদানে হুদহুদ পাখি ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আর সুলাইমান পাখিদের খোঁজখবর নিতে গিয়ে বললেন, আমি যে হুদহুদকে দেখছি না, কারণ কী? সে কি অনুপস্থিত? (সুরা নামল : ২০)।
হুদহুদ সুলাইমান (আঃ) এর অত্যন্ত অনুগত ছিল। অন্য রাষ্ট্রের দরকারি খবরাখবর নিয়মিতই সুলাইমান (আ.) হুদহুদের মাধ্যমেই নিতেন। সুলাইমান (আঃ) র এই হুদহুদের নাম ছিল ইয়াফুর। একদিন হুদহুদ বললো, বাদশাহ নামদার!
খোঁজ নিয়ে জানলাম, ইয়েমেন দেশটি চালান একজন নারী; কিন্তু তিনি অগ্নিপূজক। নাম তার বিলকিস বিনতে শারাহিল।
সুলাইমান (আ.) খানিক ভেবে একটি চিঠি লিখলেন রানী বিলকিসের কাছে। তাতে লিখলেন ‘গোমরাহির পথ ছেড়ে দাও, সত্যের পথে ফিরে এসো। অগ্নিপূজা বন্ধ করো, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করো, তার ইবাদত করো। সময় থাকতে আমার অধীনতা স্বীকার করো।’
হুদহুদ ঠোঁটে করে এই চিঠি বয়ে নিয়ে পৌঁছে গেল রানী বিলকিসের প্রাসাদে। জানালা দিয়ে ফুড়–ৎ করে ঢুকে পড়ল রানীর ঘরে।
ঘুমন্ত রানীর বিছানার পাশে চিঠিটি রেখে চলে আসলো। এত সৈন্যের কঠোর প্রহরা ভেদ করে কে রেখে গেল এই চিঠি কেউ বলতে পারল না।
রানী চিন্তাই পড়ে গেলেন। অনেক ভেবেচিন্তে সুলাইমান (আঃ) কে সন্দেহ করলেন কারণ সোলাইন (আঃ) ক্ষমতা সম্পর্কে তিনি হইতো জানতেন ৷ তাই সোলাইমান )আঃ)কে বসে আনতে দামি দামি উপঢৌকন দিয়ে দূত পাঠালেন।
সুলাইমান (আঃ) আল্লাহর নবী।
তিনাকে অত সহজে কেও বস করতে পারবে না। পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, ‘রানী বিলকিস কি এসব উপঢৌকন দিয়ে আমাকে খুশি করতে চায়? আমি সম্পদের কাঙাল নই। তোমাদের রানী এখনও অগ্নিপূজা ছাড়েনি, তাকে গিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বলো।’
খবর পেয়ে রানী রওনা হলে নবী সুলাইমান (আঃ) এব় দরবারে।
রানী কখন আসছেন, কীভাবে আসছেন। এসব হুদহুদ আগেই জানিয়ে দিল সুলাইমান (আ.)কে ।
হোক না অগ্নি-উপাসক। কিন্তু তিনিও তো একটি দেশের রানী। তারও সম্মান আছে। মর্যাদা আছে। সুলাইমান (আ.) রাজ দরবারকে সুন্দরভাবে সাজালেন।
এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলেন সুন্দর সুন্দর ফুল ও সুগন্ধি।
রানী আসার আগেই জিনের মাধ্যমে সুলাইমান (আ.) সাবা নগরী থেকে রানীর স্বর্ণখচিত ও পাথরে অলঙ্কৃত সিংহাসন নিয়ে এলেন নিজের দরবারে।
রানী এলেন। এখানে নিজের সিংহাসন দেখে তিনি ভেবেই পেলেন না কেমন করে এটা সম্ভব! সুলাইমান (আ.) তাকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ইসলামের দাওয়াত দিলেন। আল্লাহর একত্ববাদের কথা বললেন। সব দেখে-শুনে মুগ্ধ রানী।
তার পর অগ্নিপূজা ছেড়ে দিয়ে তখনই আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করতে আগ্রহী হলেন ফলে শামিল হলেন চির শান্তির পতাকাতলে। তাওহিদের পতাকাতলে।