খেজুরের ২৪ টি অসাধারণ উপকারীতা
১. আল্লাহর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর বিশুদ্ধ বাণী, “উন্নতমানের ‘আজওয়াহ’ (মদীনা মুনাওয়ারার সর্বাপেক্ষা মূল্যবান খেজুরের নাম) এর মধ্যে প্রতিটি রোগের আরোগ্য রয়েছে।” আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী হানাফী ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ এর বর্ণনা অনুসারে, “সাতদিন যাবত প্রতিদিন সাতটি করে ‘আজওয়াহ’ খেজুর খেলে ‘কুষ্ঠরোগ’ (সাদারোগ) দূরীভূত হয়।” (উমদাতুল কারী, খন্ড-১৪, পৃ-৪৪৬, হাদীস নং-৫৭৬৮)
২. প্রিয় আকা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা ﷺ এর জান্নাত রূপী বাণী হচ্ছে, “আজওয়া খেজুর জান্নাত থেকে।” এটা বিষ-আক্রান্তকে আরোগ্য দান করে।”
(তিরমিযী শরীফ, খন্ড-৪র্থ, পৃ-১৭, হাদীস নং-২০৭৩) বোখারী শরীফের বর্ণনানুসারে, যে ব্যক্তি সকালে ৭টা ‘আজওয়া’ খেজুর খেয়ে নেয়, ওই দিন যাদু এবং বিষ তাকে ক্ষতি করতে পারবে না।” (সহীহ বোখারী, খন্ড-৩য়, পৃ-৫৪০, হাদীস নং-৫৪৪৫)
৩. সায়্যিদুনা আবু হুরায়রা ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ থেকে বর্ণিত, খেজুর খেলে ‘কুলাজ’ রোগ (কুলাজকে ইংরেজীতে APPENDIX বলা হয়) হয় না।” (কানযুল উম্মাল,খন্ড-১০ম, পৃ-৬২, হাদীস নং-২৪১৯১) রয়েছে।
৪. প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর শেফারূপী বাণী হচ্ছে, “সকালে নাস্তা রূপে খেজুর খাও! এর ফলে পেটের ক্রিমি মরে যায়।” (জামেউস সগীর, পৃ-৩৯৮, হাদীস নং-৬৩৯৪)
৫. হযরত সায়্যিদুনা রবীই ইবনে হাসীম ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ বলেন, “আমার মতে গর্ভবতী নারীর জন্য খেজুর অপেক্ষা, আর অন্যান্য রোগীর মধু অপেক্ষা উত্তম অন্য কোন বস্তুর মধ্যে শেফা (আরোগ্য) নেই।” (দুররে মানসুর, খন্ড-৫ম, পৃ-৫০৫)
৬. সায়্যিদী মুহাম্মদ আহমদ যাহবী ﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ বলেন, “গর্ভবর্তীকে খেজুর আহার করানো হলে ﺇﻧﺸﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻭﺟﻞ পুত্রসন্তান প্রসব করবে, যে সুশ্রী, ধৈর্য এবং পরম স্বভাবের হবে।”
৭. যে ব্যক্তি উপবাসের কারণে দুর্বল হয়ে গেছে, তার জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী, কেননা, এটার মধ্যে খাদ্যপ্রাণ (খাদ্যের উপাদান) ভরপুর। তা আহার করলে তাড়াতাড়ি শক্তি ফিরে আসে। সুতরাং খেজুর দ্বারা ইফতার করার মধ্যে এ রহস্যও রয়েছে।
৮. রোযায় তাৎক্ষণিকভাবে বরফের ঠান্ডা পানি পান করে নিলে গ্যাস সৃষ্টি হয়ে পাকস্থলী ও কলিজা ফুলে যাবার আশংকা বেশি থাকে। খেজুর খেয়ে ঠান্ডা পানি পান করলে ক্ষতির আশংকা মুক্ত হওয়া যায়। অবশ্য, খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করা যে কোন সময়েই ক্ষতিকর।
৯. খেজুর ও শষা, অনুরূপভাবে খেজুর ও তরমুজ একসাথে খাওয়া সুন্নাত। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অভিমত হচ্ছে, “এতে জৈবিকগত ও দৈহিকগত দূর্বলতা দূর হয়ে যায়। মাখনের সাথে খেজুর খাওয়াও সুন্নত। (সুনানে ইবনে মাজাহ খন্ড-৪,পৃ-৪১, হাদীস নং-৩৩৩৪) এক সাথে পুরানা ও তাজা খেজুর আহার করাও সুন্নত। ‘ইবনে মাজাহ’ শরীফে আছে-যখন শয়তান কাউকে এমন করতে দেখে তখন এ বলে (আফসোস করে) “পুরানার সাথে নতুন খেজুর খেয়ে মানুষ মজবুত দেহ বিশিষ্ট হয়ে গেলো।” (সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ, খন্ড-৪র্থ, পৃ-৪০, হাদীস নং-৩৩৩০)
১০. খেজুর খেলে পুরানো ‘কোষ্টকাঠিন্য’ দূর হয়ে যায়।
১১. হৃদরোগ এবং যকৃত মুত্রথলী, প্লীহা ও অন্ত্রের রোগ-ব্যাধির জন্য খেজুর উপকারী। এটা কফ্ বের করে দেয়। মুখের শুষ্কতা দূর করে। যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে এবং প্রস্রাব সহজে বের হতে সাহায্য করে।
১২. হৃদরোগ ও চক্ষুর কালো ছানি রোগের জন্য খেজুরকে দানা সহকারে পিষে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৩. খেজুরকে ভিজিয়ে সেটার পানি পান করে নিলে, কলিজার রোগ-ব্যাধি দূর হয়ে যায়। আমাশয় রোগের জন্যও এ পানি উপকারী। (রাতে ভিজিয়ে ভোরের নাস্তায় ওই পানি পান করবেন, কিন্তু ভেজানোর জন্য ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন না।)
১৪. খেজুরকে দুধের সাথে গরম করে খাওয়া সর্বোত্তম শক্তিশালী খাদ্য। এ খাদ্য রোগের পরবর্তী দূর্বলতা দূর করার জন্য সীমাহীন উপকারী।
১৫. খেজুর আহার করলে আঘাত তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়ে যায়।
১৬. প্লীহা রোগীর জন্য খেজুর উত্তম ঔষধ।
১৭. তাজা-পাকা খেজুর ‘হলদে’ (যা বমির সাথে তিক্ত পানি বের হয়) ‘এসিডিটি’ শেষ করে।
১৮. খেজুরের বিচিগুলোকে আগুনে পুড়ে সেগুলো দিয়ে মাজন তৈরী করে নিন। এটা দাঁতগুলোকে উজ্জ্বল করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
১৯. খেজুরের পোড়া বিচির ছাই লাগালে আঘাতের রক্ত বন্ধ হয়ে যায় এবং আঘাত তাড়াতাড়ি ভরে ওঠে।
২০. খেজুর বিচিকে আগুনে ফেলে ধোঁয়া নিলে অর্শ্বরোগের ক্ষতগুলো শুকে যায়।
২১. খেজুর গাছের শিকড়গুলো কিংবা পাতাগুলোর পোড়া ছাই দ্বারা মাজন তৈরী করে দাঁত মাজলে দাঁতের ব্যথা দূর হয়। শিকড় ও পাতাগুলো সিদ্ধ করে তা দ্বারা কুলি করলেও দাঁতের ব্যথা দূর হয়।
২২. যে ব্যক্তির খেজুর খেলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (SIDE EFFECT) দেখা দেয়, সে আনারের রস কিংবা পোস্তা-দানা অথবা কালো মরিচের সাথে খেলে, ﺇﻧﺸﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻭﺟﻞ উপকার পাওয়া যাবে।
২৩. আধ-পাকা ও পুরানা খেজুর একসাথে খেলে ক্ষতি করে। অনুরূপভাবে, খেজুরের সাথে আঙ্গুর কিংবা কিসমিস বা মুনাক্কা মিলিয়ে খাওয়া, খেজুর ও ডুমুর ফল একসাথে খাওয়া, রোগ উপশম হবার সাথে সাথেই দূর্বলতার সময় বেশী
খেজুর খাওয়া এবং চোখের রোগে খেজুর খাওয়া ক্ষতিকর। একই সময়ে পাঁচ তোলা (অর্থাৎ- প্রায় ৬০ গ্রাম) অপেক্ষা বেশী খেজুর খাবেন না।
২৪. পুরানা খেজুর খাওয়ার সময় ছিড়ে ভিতরে দেখে নেয়া সুন্নত। কেননা, তাতে কখনো কখনো ছোট ছোট লাল বর্ণের পোকা থাকে। সুতরাং পরিস্কার করে খাবেন। যেই খেজুরের ভিতর পোকা হওয়ার সম্ভাবনা হয় তা পরিস্কার ছাড়া খাওয়া মাকরূহ। (আউনুল মাবুদ, খন্ড-১০ম, পৃ-২৪৬)
বিক্রেতা খেজুরকে উজ্জল করার জন্য বেশীরভাগ সময় সরিষার তেল লাগায়। সুতরাং উত্তম হচ্ছে খেজুরকে কয়েক মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখা। যাতে মাছির আবর্জনা ও ধুলো-বালি আলাদা হয়ে যায়। গাছ-পাকা খেজুর বেশী উপকারী।
পোস্টটি পড়ার পর ভালো লাগলে অবশ্যই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন ।