রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস হলো রমাজান মাস । এ মাসে একটি রজনী আছে যেটাকে লাইলাতুল কদরের রজনী বলা হয় যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম । এ মাসে জান্নাতের দরজা খুলে যায় ,জাহান্নামের দরজা বন্ধ হয়, অবাধ্য দুষ্টু জিন ও শয়তান বন্দী হয় । এ মাসে নফল আদায় করলে অন্যান্য মাসের ফরজ আদায় করার সমান নেকী পাওয়া যায় । এ মাসে ফরজ আদায় করলে অন্যান্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করার সমান নেকী পাওয়া যায় । এ মাসে নেকির পরিমাণ অন্য মাসের তুলনায় ৭০ গুণ বেড়ে যায় ।
যেহেতু এই মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি তাই এই মাস আসার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিতে হবে কেননা এ মাসটি খুব সুন্দর ভাবে কাটাতে হবে এবং এই মাসের সমস্ত ফজিলত সঞ্চয় করতে হবে ।
রমাজান আসার আগে যে কাজগুলি আমাদের সেরে নিতে হবে তা হলো ।
(১) রামাজান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা ।
রমাজান মাস আসার আগেই রমজান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং রোজার বিভিন্ন মাসআলা মাসায়েল জানতে হবে । কারণ
এটা আপনাকে রামাজানের ইবাদাতসমূহ সঠিক ও পূর্ণভাবে পালনের নিশ্চয়তা দেবে ,রামাজান সম্পর্কে আপনি যতো বেশি জানবেন ততো বেশি ইবাদাত করে আপনার প্রতিদানকে বহুগুণে বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
(২) রামাজানের জন্য পরিকল্পনা তৈরি ।
যেহেতু রমাজান মাস একটি ফজিলত পূর্ণ মাস তাই এবাদত এর বিভিন্ন পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে যেমন
(১)সম্পূর্ণ কুর’আন খতম দেয়া ।
(২) নিয়মিত তারাওয়ীর নামাজ আদায় করা ।
(৩) ইফতারে আমন্ত্রণ করা।
(৪) দান খয়রাত করা ।
(৫) অতিরিক্ত নফল ইবাদত করা ।
ইত্যাদি
এই রামাজানে আপনি কোন ইবাদাতগুলো করতে চান তার একটি তালিকা তৈরি করুন, তারপর পরিকল্পনা করুন সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনার পরিকল্পনাগুলো যেন বাস্তবসম্মত হয় এবং সেগুলো যাতে আপনার স্বাভাবিক জীবন-যাত্রায় কোন ব্যাঘাত না ঘটায় ।
(৩) প্রস্তুতি গ্রহণ করা ।
রমজান মাসের জন্য পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে । যেমন অতিরিক্ত কাজ থাকলে সে কাজগুলো সেরে নিতে হবে । শরীরের মধ্যে ছোটখাটো সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করে তা সারিয়ে নিতে হবে । দানের পরিমাণ কত হবে তার একটা বাজেট তৈরি করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহ করে নিতে হবে । ইত্যাদি
এইভাবে রমাজান মাসের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে ।
(৪) রিভাইজ করা ।
রোজার নিয়ত, ইফতারের দোয়া, বিভিন্ন সূরা, বিভিন্ন ফজিলত পূর্ণ দোয়া গুলি এবং তারাবির নামাজের সম্পূর্ণ নিয়ম । রমাজান আসার আগেই ভালোভাবে রিভাইস করে নিতে হবে । এতে রমজান মাসের ইবাদতের মনোযোগ আরো বেশি বৃদ্ধি হবে ।
(৫) বদ অভ্যাসগুলোকে বর্জন করা ।
নিজের বদ অভ্যাসগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সেগুলো চিরতরে বিদায় দিতে হবে। আপনার যদি দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস থাকে, তবে এখন থেকেই তাড়াতাড়ি ঘুমানোর চেষ্টা করুন; আপনি যদি ফেসবুক আসক্ত হোন তবে এখন থেকেই ফেসবুক কম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন কোন নেশা করে থাকলে তা বর্জন করুন, গান শোনা ও সিনেমাদেখা বর্জন করুন । আমরা সবাই জানি কোন কিছু বলা খুব সহজ কিন্তু করা কঠিন। তবে আপনি যদি একবার শুরু করেন এবং আপনার নিয়্যাত যদি বিশুদ্ধ থাকে তবে দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন। ইনশা আল্লাহ সহজেই আপনার বদ অভ্যাসগুলো ছেড়ে দিতে পারবেন।
রমজান মাস শুরু হওয়ার এ সমস্ত কাজ গুলি করে ফেলতে পারলে রমজানের ফজিলত ইনশাল্লাহ পরিপূর্ণভাবে আদায় করা যাবে এবং রোজা রাখার ক্ষেত্রে ও নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে ।