মেয়েদের চুল কেটে ছোট করার বিধান
প্রশ্নঃ- আজকাল পার্লারে মেয়েরা যেভাবে চুল কাটে যেমন সামনে ছোট ছোট করে, কিংবা ইউ কাট, ভি কাট, লেয়ার কাট এজাতীয় সকল স্টাইলে চুল কাটার ব্যাপারে শরয়ী কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা? আর এভাবে চুল কাটার দ্বারা মূলত সৌন্দর্য ও বৃদ্ধি পায়। সেক্ষেত্রে শরয়ী বিধান কী হবে?
🖋Salma Ahmed Essa
উত্তরঃ- বাস্তবতা হল, ইউ কাট, ভি কাট, লেয়ার কাট ইত্যাদি স্টাইলে কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য রয়েছে, এসব স্টাইল মুসলিম সমাজের নারীদের মাঝে ফ্যাশন হিসেবে ব্যপকহারে অনুপ্রবেশ করেছে।এর কারণে এসব স্টাইল জায়েয হয়ে যাবে না। কেননা ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে। (আবু দাউদ- ৪০৩১) অন্য হাদীসে এসেছে,
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহুদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী- ২৬৯৫)
আর মাথার কিছু অংশের চুল ছোট করা, যেমন সামনের চুল কেটে ছোট করা এবং অন্যগুলো রেখে দেওয়া– এটি ‘কুযা’ এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে ইবনে উমর (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত হাদীসে এসেছে যে,
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ )কুযা’ করা থেকে তথা শিশুর মাথার একাংশের চুল কামাই করে অপর অংশের চুল রেখে দিতে নিষেধ করেছেন। (সহিহ বুখারী ৫৯২১)
এছাড়া এধরণের চুল কাটার কারণে মহিলাদেরকে পুরুষের মত লাগে। আর মহিলাদের পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ করা জায়েজ নয়। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ওই সবপুরুষদের লানত করেছেন, যারা মহিলাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে। এবং ওই সমস্ত মহিলাদের লানত করেছেন, যারা পুরুষদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে৷ এবং তিনি আরও বলেন, তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও। (বুখারী- ৫৮৮৫)
আর যেহেতু এই ভাবে চুল কাটা বেদ্বীন ও বিধর্মীদের বৈশিষ্ট্য এমন করা কোনো রুচিশীল, সুষ্ঠ চরিত্রের মানুষের বৈশিষ্ট্য নয়। তাই কোন মুসলামানের এ শ্রেণীর লোকেদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা উচিত নয়।
মহিলাদের চুলের ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক নীতিমালা হল-
মহিলারা চুল লম্বা রাখবে। পবিত্র হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন (রাঃ) চুল লম্বা রাখতেন। এছাড়া মহিলারা তাদের চুল খাটো করতে পারবে, তবে তা পুরুষের সাথে সাদৃশ্য না হয়। (সহীহ বুখারী- ২/৮৭৪; জামে তিরমিযী- ১/১০৩; সহীহ মুসলিম- ১/১৪৮)
আল্লাহু ও রাসুলুহু আ’লাম