আসসালামু আলাইকুম
আল্লাহর নামে শুরু করছি যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু ।
মহান স্রষ্টা আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যে পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ করেছেন তা সমস্ত মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক বড় নিদর্শন । এই কুরআনের সঙ্গে যারাই টক্কর দিয়েছে হয়তো তারা ধ্বংস হয়ে গেছে অথবা সত্য স্বীকার করতে বাধ্য হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে । আজ তেমনই একটি উদাহরণ পেশ করতে যাচ্ছি ।
আল্লাহ্ তাআলা সূরা নামালের মধ্যে বলেন:”অবশেষে যখন তারা পিপড়া অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছল তখন এক পিপড়া বলল, ‘হে পিপড়া- বাহিনী! তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ কর, যেন সোলাইমান ও তাঁর বাহিনী অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পায়ের নিচে পিষে না ফেলে “।
(সুরা আন-নামল:১৮)
ইসলামের ঘোর বিরোধী কিছু ইউরোপীয় ধর্মনিরপক্ষ পন্ডিত একবার কয়েক সদস্য বিশিষ্ট একটি গবেষক টিম বানিয়েছিল। তাদের ভিশন ছিল অন্তত একটি ভুল হলেও কুরআন থেকে বের করে একথা প্রমাণ করা যে, কোন কিতাবই নিখুঁত ও নির্ভুল নয়। কোরআনে যেহেতু অধিকাংশ বিষয়ই আধ্যাত্মিক ও পারলৌকিক অর্থ বহন করে সেহেতু তাদের মনে অনেকটাই কনফিডেন্স ছিল যে দর্শনগত কিছু ভুল হয়তো তারা খুঁজে পেয়ে মুসলমানদের লা জবাব করবে, বিপদে ফেলবো, ধর্মের প্রতি বিশ্বাস দুর্বল করে দেবে।
অবশেষে ভাবনা অনুযায়ী কঠিন গবেষণা আর হাড় ভাঙা পরিশ্রমের পর টিমের সদস্যদের একেকজনের ভিন্নমুখী দর্শনে কুরআনের এই অংশে তারা মতানৈক্যে জড়িয়ে যায়। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় কুরআনের ভাষাগত ত্রুটি বের করবে যেখানে মতানৈক্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। দীর্ঘ সময় পর ব্যাকরণগত কোন ত্রুটি না পেয়ে একটি শাব্দের ব্যবহারিক অর্থ ও প্রয়োগ স্হান নিয়ে আপত্তি জানালো। সুরা নামলে ইফতার সম্পর্কে ব্যবহৃত একটি শব্দ “لا يحطمنكم” শব্দটি নিয়ে আপত্তি জানালো। কারণ التحطيم শব্দটির অর্থ হচ্ছে ভেঙে টুকরো টুকরো করা বা পিষে গুড়া করা। কাজেই التحطيم শব্দটির যথার্থ ব্যবহার কাঁচ বা কাঁচ জাতীয় পদার্থ ছাড়া অন্য কিছুতে সম্ভব নয়। তাহলে কিভাবে পিপড়ার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করা সঠিক হয়েছে ? যেহেতু পিপড়াকে পায়ের নিচে ফেলে টুকরো করা বা গুড়া করা যায় না সেহেতু এই শব্দটি পিপড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ভুল হয়েছে। এভাবে তারা একটা অযাচিত ভুল দেখিয়ে অনেক উল্লাস করেছিল, তারা খুব খুশি হয়েছিল।
কিন্তু এর বহু দিন পর অস্ট্রেলিয়ার প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন অধ্যাপকের পিপড়ার জীবন রহস্য নিয়ে গবেষণা করেন, গবেষণায় দেখা গেছে পিপড়ার শরীরের বাহিরের অংশে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাঁচের উপাদান বিদ্যমান। এবং এর শরীর উন্নত মানের গ্লাস ফাইবার দ্বারা তৈরী। যার কারণে একটি মৃত পিপড়ার খোলস সামান্য আঘাতে ভেঙে অনেক গুলো খন্ডে টুকরো হতে দেখা যায়। অতপর সেই অধ্যাপক ইসলাম গ্রহণ করতে বিলম্ব করেন নি । আলহামদুলিল্লাহ
সুতরাং পবিত্র কুরআন মজিদ একমাত্র নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ যা আধুনিক ভাষাশৈলীর সর্বোৎকৃষ্ট নিদর্শন। ভাষা বিন্যাসে শব্দ প্রয়োগ, বাক্য গঠন এবং ছন্দ প্রবাহে এই কোরআন সর্বাধুনিক শাস্ত্রে অলংকৃত হয়েছে। আর এই ভাষাশৈলীই কোরআনের অন্যতম অলৌকিকতা এবং চ্যালেঞ্জ যা কারো পক্ষে খন্ডন করা কখনোই সম্ভব নয় । যুগে যুগে অনেক ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র কুরআনের মধ্যে ফুল দেখানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু কেউ পারেনি । (কুরআনের একটি আয়াতের মত আয়াত বানানো পৃথিবীর কারো পক্ষে সম্ভব নয় )।
(মিশরীয় আরবী ম্যাগাজিন থেকে নেয়া)
(অনূদিত)
লোকমান ত্রিশালী
মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
সংগৃহীত ।
এ তথ্যটি সংগৃহীত, এ সম্পর্কে কারো আরো বিস্তারিত জানা থাকলে , আপনার জানা তথ্য আমাদের সঙ্গে শেয়ার করবেন । এতে তিনি ইসলামের খেদমত হবে ।
আল্লাহ যেন আমাদেরকে সঠিক পথে অটল রাখেন আমীন ।