প্রশ্নঃ-ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর শাহাদাতের বিষয়ে ইয়াজিদ কি জড়িত ছিল?
উত্তরঃ-ইমাম হুসাইন (رضي الله عنه) কে শহীদ করার ব্যাপারে ইয়াজিদ সরাসরি জড়িত ছিল ।
ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ুতি (রহঃ) ‘তারিখুল খোলাফা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,ইরাকবাসী ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহ আনহু এর কাছে অসংখ্য দূত মারফত পত্রাদি প্রেরণ করে তাকে সেখানে আসতে আহবান করে। অতঃপর হোসাইন (رضي الله عنه) জিলহজ্বের ১০ তারিখ মক্কাশরীফ থেকে ইরাক পথে রওয়ানা দেন। তার সাথে ছিলেন পরিবারের কিছু পুরুষ, মহিলা ও শিশুগণ।
فكتب يزيد الى واليه بالعراق عبيدالله بن زياد بقتاله
তখন ইয়াজিদ ইরাকের গভর্ণর উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদকে পত্র মারফত নির্দেশ দেয় হোসাইন (رضي الله عنه) এর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য।
(তারিখুল খোলাফা’ গ্রন্থের ১৬৫ পৃষ্ঠায় (অন্য print অনুযায়ী ১৪১পৃষ্ঠা)
হযরত ইমাম হুসাইন (رضي الله عنه) যুদ্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে রওনা হন নি, সে কখনোই যুদ্ধ করতে চায়নি, তাকে জোরপূর্বক যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে । ফোরাত নদীর পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে,তার চোখের সামনে নিজের সন্তানদের শহীদ (হত্যা) করা হয়েছে । ৬ মাসের শিশু আলি আসগার (রাঃ) তীরের আঘাতে তার কোলে শহীদ হয়েছেন । এ সমস্ত কিছু হয়েছে ইয়াজিদের পাঠানো চিঠির জন্য । যুদ্ধ করতে আদেশ দেওয়া মানেই হত্যার আদেশ দেওয়া ।
এত বড় মর্মান্তিক ঘটনা হয়ে যাওয়ার পরেও অনেক ভ্রান্ত মতবাদের মাওলানা বিশেষ করে আহলে হাদিস ভায়েরা ইয়াজিদকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে । তাদের কর্মকান্ড দেখে বোঝা যায় তারাই ইয়াজিদ প্রেমী মানুষ । আমরা আহলে বাইত প্রেমী হয়ে পৃথিবী থেকে যেতে চাই, ইয়াজিদ প্রেমী হয়ে নয় । ইয়াজিদ প্রকাশ্যে ইসলামবিরোধী কাজ করেছে, মসজিদে নববীতে ঘোড়া বেধেছে এবং তিনদিন আজান বন্ধ করে দিয়েছে, কাবার গিলাফ জানিয়ে দিয়েছে, মদকে জায়েজ মনে করেছে ইত্যাদি বহু ইসলামবিরোধী হারাম কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল । এতটাই খারাপ ছিল ইয়াজিদ যে বর্তমানে কেউ সন্তানের নাম ইয়াজিদ রাখেনা । যারা ইয়াজিদকে ভালোবাসে তারাও রাখে না । কিন্তু একটু আশেপাশে ঘুরে দেখুন অসংখ্য মানুষের নাম হোসাইন রাখা হয়েছে ।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আহলে বাইতের বিরুদ্ধে গিয়ে কখনো সঠিক পথ পাওয়া যাবে না ।
আহলে বাইত কে যারা ভালবাসবে নিঃসন্দেহে তারা সঠিক পথে থাকবে ।
হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বিদায় হজের সময় আরাফাত দিবসে রাসূল পাক (ﷺ) কে ‘ক্বাসওয়া’ নামক উটের উপর আরোহনরত অবস্থায় বলতে শুনেছি ও দেখেছি- নবীজী (ﷺ) ইরশাদ করলেন- হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের মাঝে এমন কিছু রেখে যাচ্ছি, যদি তোমরা তা মজবুতভাবে আঁকড়ে ধর তাহলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হলো কিতাবুল্লাহ্ ও আমার বংশধর- আমার আহলে বাইত। [মিশকাত শরীফ: পৃষ্ঠা ৫৬]