আদর্শবান নারীর গুণাবলী ও নারী স্বাধীনা
নারী নামটা শুনলে যেন মনে পড়ে যায় সেই অজ্ঞতার যুগের কথা , যে সময় কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবরস্ত করা হতো , ছিল না তাদের মর্যাদা তাদেরকে শুধুমাত্র দাসি রূপে ব্যবহার করা হতো । বাস তারপর ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের আল্লাহতালা পৃথিবীর জমিনে সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বর নবী মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করলেন, যার আগমনের ফলে বদলে গেল পৃথিবীর রূপ ।
নারীরা পেল এক বিশেষ মর্যাদা ।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন –
الدنيا متاع وخير متاع الدنيا المرأة الصالحة
সমস্ত পৃথিবীটা সম্পদ এবং সর্বোত্তম সম্পদ হলো সৎ চরিত্রের নারী বা স্ত্রী।
বাস বেড়ে গেল গেল সেই নারীর মর্যাদা । নারীর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি করতে আল্লাহতালা পর্দার আদেশ দিলেন যাতে করে কেউ নারীদের খোলামেলা অবস্থায় না দেখতে পারে । তাদের সৌন্দর্য এবং মর্যাদা হেফাজতে থাকে । কারণ তাদের মূল্য অনেক বেশি ।
একটু চিন্তা করলে বুঝতে পারবেন পৃথিবীতে যে জিনিসের দাম যত বেশি সে জিনিসকে ততবেশি যত্নে রাখা হয় এবং ঢেকে রাখা হয় ।ইসলামে নারীর মূল্য অনেক বেশি তাই তাদের ঢেকে রাখা হয় যত্নে রাখা হয় পর্দায় রাখা হয় ।
বর্তমানে কিছু মেয়ে ভাবছে তাদের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে , বেপর্দা খোলামেলা ঘোরাঘুরি করছে । তাদের বেহায়াপনা চলাফেরা দেখে অসংখ্য যুবকের মাথা ঘুরছে।
কিন্তু সে সমস্ত নারী যারা নিজের মূল্য বুঝতে পেরে নিজেকে পর্দার মধ্যে ঢেকে যত্নে রেখেছে । তারা ইহকাল ও পরকালের জীবন ধন্য করেছে ।
বন্ধুরা তাই আজকের ভিডিওতে আলোচনা করব একজন আদর্শবান সৎ চরিত্রের নারী বা স্ত্রীর কয়েকটি গুণাবলী ।এসমস্ত গুণগুলি যদি কোন নারীর মধ্যে পেয়ে থাকেন তাহলে বুঝবেন নিঃসন্দেহে এই নারীটি আদর্শবান । বিশেষ করে বিয়ের পূর্বে অবশ্যই যাচাই করে নেবেন ।
তো চলুন জেনে নিই আদর্শবান নারী বা স্ত্রীর কয়েকটি গুণাবলী
১- ধর্য্যশীলতা
একজন আদর্শবান স্ত্রীর এক বৈশিষ্ট্য বা গুন হল ধৈর্যশীলতা,
এ সমস্ত স্ত্রীরা পরিবারের সকল কে যে কোনো ধরনের মারাক্তক বিপর্যয়ে রক্ষা করতে পারে ।
এবং যথাসময়ে সৎ উপদেশ দিতে পারে ।
এ সমস্ত স্ত্রীরা পিতা-মাতা ও স্বামীর সঙ্গে অযথা বিতর্ক করে না ধৈর্যের মধ্যে নিজেকে আগলে রাখে এবং পরবর্তীতে মিষ্টি স্বরে যুক্তিসঙ্গতভাবে সমস্যার সমাধান করতে দেয় ।
২ সত্যবাদীতা ও কোমলতা
একজন সত্যবাদী ও
মিষ্টিভাষী স্ত্রী পরিবারের জন্য নেয়ামত স্বরূপ।
একজন সত্যবাদী ও উত্তম আচরন কারি স্ত্রী আল্লাহ ও তার রাসূলের নিকট খুবই প্রিয়।
৩ পর্দাশীলতা ও লজ্জাশীলতা আল্লাহ পাক মুমিন
নারী পুরুষের প্রতি পর্দা ফরজ করেছেন। পর্দা হলো এক জন আদর্শ ও সম্ভ্রান্ত নারীর
প্রতিক।
পর্দা মানুষের মধ্যে লজ্জা সৃষ্টি করে এবং যৌন অপকর্ম থেকে দূরে রাখে। রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন_লজ্জা হলো ঈমানের অঙ্গ। একজন
পর্দাশীল নারী যার তার সাথে মেলামেশা করতে পারে না, তার পর্দা ও লজ্জা তাকে হেফাজত করে।
৪ অল্পেতুষ্টি
যদিও ইসলামী বিধান মোতাবেক
স্ত্রীর যাবতীয় ভরণ-পোষণের দায়িত্ত
স্বামীর উপর অরপিত,তথাপিও স্ত্রী কে স্বামীর সামর্থের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা তার দায়িত্ত। একজন আদর্শবান ধার্মিক সৎ চরিত্রের স্ত্রী অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায় ।
৫ উত্তম ব্যাবহার
আদর্শবান স্ত্রীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উত্তম ব্যবহার । যে স্ত্রী তার স্বামী ও স্বামীর আত্নীয়-স্বজনের সাথে উত্তম ব্যাবহার করবে সে উত্তম নারী হিসাবে গণ্য হবে। দুনিয়াতে
সে সকলের আদরের পাত্রী ও শান্তির প্রতিক হয় ।
এবং তাদের ইহকাল ও পরকাল ধন্য হয়ে যায় ।
৬- স্বামীর আনুগত্য।
সৎ চরিত্রের নারীরা বিয়ের পর স্ত্রী হয়ে যায় এবং স্বামীর আনুগত্য করে থাকে ।কারণ তারা স্বামীর মর্যাদা সম্পর্কে অবগত থাকে ।
রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন-যদি কারো জন্য সেজদার নির্দেশ দিতাম তাহলে স্ত্রীদের নির্দেশ দিতাম তাদের স্বামীকে সিজদা করতে।
(তিরমিযী)
৭ স্বামীর সম্পদের হেফাজত করা ।
স্ত্রীর নিকট স্বামীর সম্পদ আমানত স্বরূপ। স্ত্রীর উচিত
স্বামীর এই সম্পদের রক্ষণা-বেক্ষণা করা এবং স্বামীর অনুমতি ব্যতিত খরচ না করা। আর একজন
আদর্শ স্ত্রী অবশ্যই স্বামীর সম্পদ কে
নিজের সম্পদ মনে করে রক্ষণা-বেক্ষণ করে থাকে।
৮ সন্তানকে ভালো শিক্ষা দেওয়া।
একজন আদর্শবান স্ত্রী যখন সন্তানের মা হয়ে যান , তখন তিনি নিজের সন্তানকে আদর্শবান করে তোলার চেষ্টা করেন । ভালো কাজ ও মন্দ কাজের মধ্যে পার্থক্য ছোটবেলায় সন্তানকে বোঝানোর চেষ্টা করে । ফলে সন্তান বড় হয়ে আদর্শবান হয় ।
৯ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা
রাসূল (সাঃ) ইরশাদ
করেন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।
একজন আদর্শবান স্ত্রী সর্বদাই ঘরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখে । তারা নোংরামি পছন্দ করেনা ।
১০- পরনিন্দা ও গীবত থেকে দূরে থাকা ।
আপনার লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, মেয়েরা বেশি গীবত, সমালোচনা, পরচর্চা, বেশি করে থাকে ,কিন্তু একজন আদর্শবান সৎ চরিত্রের নারী বা স্ত্রী এগুলি পছন্দ করেনা । তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে এবং বাকি সময় ঘরের কাজে কামে কাটিয়ে দেয় । তারা আড্ডা করা একদম পছন্দ করেন না ।
একজন আদর্শবান অসৎ চরিত্রের নারীর মধ্যে এর সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলি প্রায় থাকবে । আমরা সকলেই জানি সংসার সুখী হয় রমনীর গুনে।
আমাদের প্রত্যেকের একটা দায়িত্ব নিজের বাড়িতে যে সমস্ত নারীরা আছেন তাদেরকে আদর্শবান বানানো । নিজ নিজ ঘরের নারীদের যদি আমরা সঠিকভাবে লালন পালন করতে পারি তাহলে একসময় এ পৃথিবীর রং বদলে যাবে ইনশাআল্লাহ ।
আব্দুল আজিজ কাদরী
(প্রবন্ধের পরিবর্তন না ঘটিয়ে , বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে সাওয়াবে দারাইন হাসিল করুন )