একটি চমৎকার শিক্ষণীয় ঘটনা !
একজন বিজ্ঞ আলেম একটি ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেন যে, একটি দেশের র্রাষ্ট্র পরিচালনা ছিল অনেকটা অদ্ভুত এবং ভিন্ন। সেখানকার যারা জ্ঞানী-গুণী ছিল, তারা কোন ব্যক্তিকে কোন নির্বাচন ব্যতীত তাদের যাকে পছন্দ হত, তাকে ৫ বছরের জন্য রাজা বানিয়ে দিত, তাকেই দেশ পরিচালনা করতে হত। সে ৫ বছর পর্যন্ত নিজের ইচ্ছামত শাসন করত। কিন্তু তাদের একটা নিয়ম ছিল যে, ৫ বছর পূর্ণ হলেই তাকে গভীর জংগলে ছেড়ে আসা হত কোন থাকার সুব্যবস্থা ছাড়া, চাহে তাকে সেখানে বাঘে খেয়ে ফেলুক অথবা অন্য বন্য পশু আক্রমণ করে তাকে মেরে ফেলুক। তারা সেই রাজার কোন ধরনের কাকুতি মিনতি কে গ্রহণ করত না, তাকে অবশ্যই ফেলে আসা হত এবং সে সেখান থেকে কোনভাবেই মানব বস্তিতে ফিরে আসতে পারত, তা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল, তাকেই আসতেই দেওয়া হত না।
এরপর, তারা নতুন রাজা নির্বাচন করত, সেও ৫ বছরের রাজত্বের পর একই অবস্থার শিকার হত। এজন্য যারা রাজা হত, তারা তাদের ৫ বছর রাজত্বকালে, তাদের ইচ্ছামত গোনাহ করত, মদের আডডা, বেহায়াপনাসহ যত রকমের গোনাহ করা সম্ভব সবই করত, যখন তাদের ৫ বছরের সময়কাল ফুরিয়ে আসত, তখন তারা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ত, তাদের চেহেরা ফ্যাকাসে হয়ে পড়ত, কারণ কিছু সময় তাদের সেই একই দশা হওয়াটা ছিল নিশ্চিত। এভাবেই চলতে থাকল, একের পর এক রাজা রাজত্ব করতে থাকল। পর্যায়ক্রমে, ক্ষমতা পেল এক বুদ্ধিমান বাদশাহ। তিনি ক্ষমতা পাওয়ার পর কোন ধরনের খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে সময় নষ্ট না করে, বরং তিনি রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে, ঐ জংগল যেখানে তাকে ৫ বছর ক্ষমতার পর চলে যেতে হবে, তিনি ক্ষমতার শেষ হওয়ার আগেই সেই জায়গাটি কে রাজমহলের চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর ও আরামদায়ক স্থানে পরিণত করল। যখন তার ৫ বছরের ক্ষমতা সমাপ্ত হল, সে অনেক খুশি হল, আনন্দচিত্তে সেখানে গেল, কারণ সে এমন স্থানে যাচ্ছে যেখানে সবসময় তার বাদশাহী চলবে, কেউ তাকে তাড়াতে পারবে না।
ঘটনার_শিক্ষাঃ– ওই বিজ্ঞ আলেম ঘটনার শিক্ষা এভাবে বর্ণনা করেন যে, ঔ ৫ বছরের রাজত্বের সময়টা হল মানুষের জীবন, মহান আল্লাহ পাক মানুষকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, এই জীবন শেষ হওয়া মাত্রই তার প্রিয় আত্মীয় স্বজন’রা তাকে অন্ধকার কবরে একা ফেলে চলে আসবে, চাহে সে সেখানে কঠিনতম ও ভয়ানক আজাবের শিকার হলেও, নিষ্ঠুর ভাবে তাকে সেখানে ফেলে আসবে। কিন্তু, সে যদি এই সংক্ষিপ্ত জীবনে আরাম আয়াসের চিন্তা না করে, বরং আল্লাহু তায়ালার আদেশ মত নিজের জীবন অতিবাহিত করে, ৫ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে জামাত সহকারে আদায় করে, সব ধরনের গোনাহ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে, মানুষের সাথে সবসময় ভাল আচরণ করে, তাহলে সে এই সামান্য কষ্টের বিনিময়ে আখিরাতের চিরস্থায়ী এবং দুঃখমুক্ত জীবন লাভ করবে, সেখানে সে যা চাইবে তাই পাবে, কোন নিয়ামত ফুরাবে না এবং মৃত্যু ও আসবে না৷ অপরদিকে, সে দুনিয়ার এই সংক্ষিপ্ত জীবনে নিজের ইচ্ছামত অতিবাহিত করলে তার জন্য পরকালের অন্তত ভয়াবহ, কল্পনাহীন, কঠিনতম অসহ্য আজাব ভোগ করতে হবে, যা কেউই বরদাশত করতে পারবে না। এজন্য আপনার জীবনের প্রতি মূহুর্তের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করুন, সর্বদা এই চিন্তা করুন যেন আপনার চিরস্থায়ী সেই আখিরাতের স্থান সবচেয়ে উত্তম স্থান হয়।
সাদকায়ে জারিয়া হিসাবে সবাই শেয়ার করে অন্যদের জানিয়ে দিন ।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে বোঝার এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন- আমিন-আমিন