দান-সদক্বাহ-যাকাতের হুকুম ও ফজিলত

দান-সদক্বাহ-যাকাতের হুকুম ও ফজিলত

১. হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। তাদের মধ্য থেকে কাকে হাদিয়া দেবো? হুজুর  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন- যার দরজা তোমার বেশী নিকটে তাকে দাও।  
সূত্র- বোখারি ও শরিফ। মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৮৩৮।


২. হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “যে মুসলমান কোন বিবস্ত্র মুসলমানকে কাপড় পরিধান করায়, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ কাপড় জোড়া পরাবেন। যে মুসলমান কোন ক্ষুধার্ত মুসলমানকে আহার করাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে ফলমূল আহার করাবেন। আর যে মুসলমান কোন পিপাসার্ত মুসলমানকে পান করাবে, আল্লাহ তা’আলা তাকে শীল-মোহরকৃত পাক-সাফ পানীয় পান করাবেন।” 
সূত্র- {আবূ দাউদ, তিরমিযী শরিফ। মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৮১৬}

৩- হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব   রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এমন কাউকে আল্লাহর পথে ঘোড়া দিয়েছি, যার নিকট ওই ঘোড়া ছিলো। সে সেটা বিনষ্ট করে (অকেজো) করে ফেললো। আমি চাইলাম ঘোড়া ক্রয় করবো। আমার ধারণা ছিলো যে, সে সস্তা দামে বিক্রি করবে। আমি নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম। হুজুর  ইরশাদ করলেন- সেটা ক্রয় করো না এবং নিজের সাদক্বাহ ফেরত নিও না। যদিও সে তোমাকে এক দিরহামের বিনিময়ে দেয়। কেননা, নিজের কৃত সাদক্বাহ যে ফেরত নেয় সে ওই কুকুরের মতো, যে বমি করে তা লেহন করে খেয়ে ফেলে।
অন্য এক বর্ণনায় আছে- সাদক্বাহ ফেরত নিও না! কেননা, নিজের সাদক্বাহ যে ফেরত নেয় সে তেমনি, যেমন নিজের বমি নিজেই পুনরায় খেয়ে নেয়।
সূত্র- বোখারি ও মুসলিম শরিফ। মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৮৫৬।

৪. হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- এমন কোন দিন নেই, যে দিন বান্দা ভোরবেলা জেগে উঠে, কিন্তু দু’জন ফিরিশতা অবতরণ করেন, যাদের একজন বলে থাকে, ” হে আল্লাহ! প্রত্যেক দানশীলকে  উত্তম প্রতিদান দিন।” আর অন্যজন বলেন, “হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস দিন। সূত্র- বোখারি ও মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৭৬৪।


৫.হযরত আবূ উমামাহ  রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “মহান আল্লাহ ইরশাদ ফরমান, হে মানব জাতি! যদি তুমি উদ্বৃত্ত সম্পদ ব্যয় করো, তবে তোমার জন্য মঙ্গল। যদি তুমি তা রেখে দাও, তবে তোমার জন্য অনিষ্ট এবং প্রয়োজনীয় পরিমাণের উপর তিরষ্কার নেই। আর নিজে পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করো।
সূত্র- মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৭৬৮।


৬. হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যাকে আল্লাহ সম্পদ দেন, অতঃপর সে এর যাকাত পরিশোধ করে না, তবে তার সম্পদ ক্বিয়ামত দিবসে তার সামনে ন্যাড়া মাথা বিশিষ্ট সাপের আকারে করা হবে, যার দুটি বাবরি  (বয়স বেশী হওয়ার কারণে মাথার উপড় থেকে কেশ চলে যাই ও দুটি শিং থাকে, যার ছোবলের বিষ খুব বেশি) থাকবে, ক্বিয়ামতে তার গলায় বেড়ী হবে। অতঃপর তার উভয় চোয়াল ধরবে, আর বলবে- “আমি তোমার সম্পদ,  আমি তোমার ধনভান্ডার।” তারপর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াত শরিফ তেলাওয়াত করেন- “ولا يحسبن الذين يبخلون অর্থ- আর যারা কার্পণ্য করে” আয়াতের শেষ পর্যন্ত।
সূত্র- বোখারি  শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৬৮০।


৭. হযরত আবূ যার রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু  থেকে বর্ণিত, তিনি নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনাকারী, হুজুর ইরশাদ করেছেন- এমন কোন লোক নেই, যার নিকট উট, গাভী কিংবা ছাগল থাকে। আর সেগুলোর হক্ব সে আদায় (যাকাত) করে না। কিনন্তু ঐ পশু ক্বিয়ামত দিবসে যত বড় ও মোটা হতে পারে তা করে উপস্থিত করা হবে। ঐগুলো আপন খুর দ্বারা তাকে দলিত করবে এবং আপন আপন শিং দিয়ে গুঁতোবে। যখনই সর্বশেষটি অতিক্রম করবে তখনই সর্বপ্রথমটাকে ফিরিয়ে আনা হবে, যে পর্যন্ত না লোকজনের মধ্যে ফয়সালা করে দেওয়া হবে।
সূত্র- বোখারি  ও মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১৬৮১।

Collected from-http://www.sunni-encyclopedia.com/

পোস্টটি পড়ার পর ভালো লাগলে অবশ্যই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন ।

Spread the love

Leave a Comment